টমেটোর উপকারিতা ও অপকারিতা জেনে নিন

আসসালামু আলাইকুম আশা করি সবাই ভাল আছেন। আজকে আমরা আপনাদের মাঝে টমেটো খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং টমেটোর পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আলোচনা করতে চলেছি। তাই আপনি যদি এ বিষয়ে জানতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে আমাদের এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন।

প্রিয় পাঠক আপনি নিশ্চয়ই টমেটো খাওয়ার উপকারিতা এবং টমেটোর পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানতে আমাদের এই পোস্টটি ওপেন করেছেন। এজন্য আমার এই আর্টিকেলে আপনাকে জানাই সুস্বাগতম। আজকেরে আর্টিকেলে আপনি টমেটোর নানারকম গুনাগুন সম্পর্কে জানতে পারবেন। তাই চলুন কথা না বাড়িয়ে জেনে নেই।

ভূমিকা

আমরা প্রত্যেকেই টমেটো খেয়ে থাকি। শীতকালীন এই সবজিটি বর্তমানে সারা বছরই বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। টমেটোর নানারকম উপকারিতা বিদ্যমান হয়েছে যেগুলো আমাদের শরীরের জন্য খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। অনেকে টমেটো খাওয়ার কি ধরনের উপকারিতা পাওয়া যায় সে সম্পর্কে জানতে চান। আপনি যদি আর্টিকেলটি সম্পূর্ণটিয়ে পড়েন তাহলে আপনি এই বিষয়ে বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন।

টমেটোর পুষ্টিগুণ

টমেটো এক ধরনের শীতকালীন সবজি। টমেটোতে নানা ধরনের পুষ্টিগুণ বিদ্যমান রয়েছে। টমেটোর এই পুষ্টিগুণ আমাদের শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। টমেটো যখন কাঁচা অবস্থা থেকে পেকে যায় তখন এর পুষ্টিগুণ কাঁচা অবস্থার থেকে বৃদ্ধি পায়। আর এই পাকা টমেটোতে প্রচুর পরিমাণের ক্যালসিয়াম বিদ্যমান রয়েছে যা আমাদের হার এবং দাঁত কে গঠন করতে সাহায্য করে। একটি পাকা টমেটোর প্রতি ১০০ গ্রামে ৩০০ মাইক্রগ্রাম ক্যারোটিন বিদ্যমান থাকে।ক্যারোটিন হচ্ছে একপ্রকার ভিটামিন যা আমাদের দেহে ভিটামিন যোগার দিয়ে থাকে।

আর এই ক্যারোটিন এর ফলে আমাদের চোখের রেটিনা গুলোকে সুস্থ রাখে এবং তার পাশাপাশি আমাদের দৃষ্টিশক্তি প্রখর করতে সহায়তা করে। এছাড়াও এই টমেটোতে প্রায় ২৮ মিলিগ্রাম এর মত ভিটামিন সি বিদ্যমান থাকে। ভিটামিন সি আমাদের হার এবং দাঁত মজবুত করতে সহায়তা করে। এছাড়াও টমেটোতে প্রায় 0.13 মিলিগ্রাম সমপরিমাণের থায়ামিন বিদ্যমান থাকে। এই থায়ামিনের ফলে আমাদের দেহের নানা রকম স্তম্ভ গুলোকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।

যেমন হৃদপিণ্ড, স্নায়ুতন্ত্র এবং পরিপাকতন্ত্রকে সুস্থ রাখতে ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও ১০০ গ্রাম পাকা টমেটোতে প্রায় ৪৮ মিলিগ্রাম সমপরিমাণ ক্যালসিয়াম বিদ্যমান থাকে। উপরোক্ত সব পুষ্টিগুণ ছাড়াও ১০০ গ্রাম টমেটোতে আরো রয়েছে ২০ মিলিগ্রাম ফসফরাস, ০.০৬ মিলিগ্রাম রিবুক লিভিং এবং ২০ গ্রাম ফসফরাস পাওয়া যায়।

টমেটো খাওয়ার উপকারিতা

টমেটো খাওয়ার নানা রকম উপকারিতা বিদ্যমান রয়েছে। টমেটোতে থাকা নানারকম পুষ্টিগুণের ফলে আমাদের শরীরের কম অনেক উপকার করে থাকে। কিন্তু এই উপকারগুলো পেতে হলে অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণ টমেটো খেতে হবে যদি এটি অধিক হারে খাওয়া হয় তাহলে এর ফলে আমাদের শরীরে নানারকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। নিচে টমেটো খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

টমেটো আমাদের স্বাস্থ্যের নানা রকম উপকার করে থাকে। যেহেতু টমেটোতে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ বিদ্যমান থাকে তাই এটির ফলে আমাদের নানারকম রোগ ব্যাধি ও ভালো হয়ে থাকে। বর্তমানে বিভিন্ন রকম খাবার রয়েছে যেগুলো খাওয়ার ফলে আমাদের ওজন অধিক হারে বৃদ্ধি পায়। আর এই কারণে অনেকে জানতে চাই যে টমেটো খেলে কি ওজন কমে নাকি বাড়ে। আর এই বিষয়ে বলতে গেলে টমেটো খেলে ওজন বৃদ্ধি পায় না বরং টমেটো ওজন কমাতে সাহায্য করে। তাই আপনার যদি ওজন বেশি হয়ে থাকে তাহলে ওজন কমানোর জন্য টমেটো খেতে পারেন। টমেটো ওজন কমাতে সাহায্য করে থাকে।

এগুলো ছাড়াও আরো নানারকম সাহায্য করে থাকে যেমন মুখে যদি ব্রণের সমস্যা থাকে তা দূর করতে সহায়তা করে, তোকে জ্বালাপোড়া ভাব থেকে থাকলে তা কমাতে সাহায্য করে থাকে এবং ত্বকের গ্লো ধরে রাখতে সহায়তা করে। ত্বকে যদি বয়সের কোন ছাপ থাকে সেগুলো ভালো করতে এবং কমিয়ে আনতে সহায়তা করে থাকে। যদি ত্বকে সূর্যের আলোতে পোড়া কোন কালো দাগ থেকে থাকে সেটি দূর করতে কার্যকরি ভূমিকা পালন করে থাকে।

এছাড়াও আরো নানারকম উপকারিতা বিদ্যমান রয়েছে টমেটো মুখে মাখার ফলে। আপনি যদি এই নিয়মিত আপনার মুখে টমেটো মাখেন তাহলে এই সকল উপকারিতা গুলো পেতে পারেন। আর এই টমেটো যেহেতু প্রাকৃতিক উপায়ে কাজ করে থাকে তাই এর কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় না। এজন্য নির্দ্বিধায় ত্বকের উপকারিতা পেতে টমেটো ব্যবহার করতে পারেন। টমেটো শীতকালীন সবজি হওয়ার ফলে এটি শীতকালে বেশি উৎপাদিত হয়ে থাকে।

টমেটো কাঁচা কিংবা পাকা দুইভাবেই খাওয়া যায়।টমেটোতে বিদ্যমান রয়েছে প্রচুর পরিমাণ এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ছাড়াও কমিটিতে চার রকমের ক্যারোটিনের বা ভিটামিন এ আছে। আর এইগুলোর ফলে আমাদের ত্বক ও চোখের সুস্থতা এবং শরীরের নানা রকম রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। কিন্তু বেশি পরিমাণে টমেটো খেলে আবার আমাদের শরীরে নানা রকম ক্ষতি ও করতে পারে।

টমেটো খাওয়ার অপকারিতা

টমেটো আমাদের শরীরের জন্য উপকারী এ কথাটি আমরা সকলেই জানি। টমেটোতে বিদ্যমান রয়েছে নানারকম পুষ্টিগুণ যেগুলো আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এত সকল প্রয়োজনীয় উপাদান থাকার ফলেও টমেটো যদি অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া হয় তাহলে এটি আমাদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। অতিরিক্ত টমেটো খেলে আমাদের যে সকল সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে সেগুলো নিচে বর্ণনা করা হলো।

টমেটো যদি অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া হয় তাহলে আমাদের শরীরে কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। এ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে আমাদের খাবার হজমে সমস্যা সৃষ্টি করে। এছাড়া অতিরিক্ত টমেটো খাওয়ার মাধ্যমে আমাদের কিডনিকে নানা ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে থাকে। আমাদের মাঝে যাদের এলার্জির সমস্যা রয়েছে তাদের অতিরিক্ত পরিমাণে টমেটো খাওয়ার মাধ্যমে এলার্জির পরিমাণ কে বাড়িয়ে তুলতে সহায়তা করে।

এজন্য যাদের অ্যালার্জির মত সমস্যা বিদ্যমান রয়েছে তারা কম টমেটো খাওয়ায় ভালো। অতিরিক্ত টমেটো খাওয়ার মাধ্যমে আমাদের শরীরের চুলকানিকে বৃদ্ধি করে থাকে। এছাড়াও আমাদের শরীরের ত্বকে নানা রকম সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। এজন্য অতিরিক্ত পরিমাণে টমেটো খেলে আমাদের মুখের ফোলা ভাব কিংবা গলায় জ্বালাপোড়া করা ইত্যাদি নানা রকম সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে। এছাড়া অতিরিক্ত টমেটো খাওয়ার মাধ্যমে আমাদের কিডনিতে পাথর সৃষ্টি করতে ভূমিকা পালন করে।

কিডনিতে পাথর তৈরির মূল কারণ হলো বিদ্যমান ক্যালসিয়াম এবং অক্সালেট। আর এই ক্যালসিয়াম এবং অক্সালের এর মাত্রা যদি শরীরে বৃদ্ধি পাওয়া শুরু করে তাহলে এটি আমাদের দেহে জমা হয়ে থাকে। আর এই জমাকৃত থাকার পরে আমাদের কিডনিতে পাথর তৈরি করে থাকে। এজন্য অবশ্যই পরিমাণ মতো টমেটো খাওয়া উচিত। যদি পরিমাণের চেয়ে অতিরিক্ত টমেটো খাওয়া হয় তাহলে আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক যেহেতু টমেটো একটি পুষ্টিকর খাবার যেটি আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। তাই এটি খাওয়া আমাদের জন্য খুবই প্রয়োজন। তবে টমেটো চেয়ে শুধু আমাদের শরীরের জন্য উপকার বয়ে আনে তা নয় অতিরিক্ত পরিমাণে টমেটো খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে এর নানা রকম অপকারিতা পরিলক্ষিত হতে পারে। এজন্য অবশ্যই চেষ্টা করবেন যেন অতিরিক্ত পরিমাণে টমেটো না খাওয়া হয়।

আপনার কাছে আজকের এই আর্টিকেলটি যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করবেন এবং আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না। আর এই ধরনের আরও তথ্যমূলক আর্টিকেল পড়তে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিতভাবে ভিজিট করুন। এতক্ষণ আমাদের পাশে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই আশা রেখে শেষ করছি আজ এই পর্যন্তই আল্লাহ হাফেজ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url