টাইটানিক জাহাজের ইতিহাস বাংলা ও টাইটানিক জাহাজের বর্তমান অবস্থা

প্রিয় পাঠক, আমরা সকলেই কল্পনা প্রবণ। তাই আমরা সকলেই টাইটানিক জাহাজের ইতিহাস বাংলা সম্পর্কে জানতে চাই। আপনি ও যদি টাইটানিক জাহাজের ইতিহাস বাংলা সম্পর্কে না জেনে থাকেন তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। কারণ আজকের এই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটিতে টাইটানিক জাহাজ কেন ডুবেছিল টাইটানিক জাহাজের ইতিহাস বাংলা সম্পর্কে জানতে পারবেন।
টাইটানিক জাহাজটি ১৯১২ সালের ১০ই এপ্রিল প্রথম যাত্রা শুরু করে। এই জাহাজটি প্রথম যাত্রা পথেই আটলান্টিক মহাসাগরে বরফের সাথে ধাক্কা লেগে ডুবে যায়। আপনারা সকলেই এই টাইটানিক জাহাজ সম্পর্কে নিম্নে বিস্তারিত জানতে পারবেন। তাহলে চলুন এখন বেশি কথা না বাড়িয়ে বিস্তারিত আলোচনায় যাওয়া যাক।

ভূমিকা

টাইটানিক জাহাজ যখন তৈরি করা হয় তখন এটি ছিলো পৃথিবীর সবথেকে বড় জাহাজ বলে দাবি করেন সেই জাহাজের ইঞ্জিনিয়াররা। তারা আরো বলেন এই জাহাজ সহজে ডুবে যাবে না। একন কি তারা এটাও দাবি করেন এই জাহাজ সৃষ্টিকর্তাও ডুবাতে পারবে না। কিন্তু শেষ পরিণতি হিসেবে প্রথম যাত্রাতেই বরফের সাথে ধাক্কা লেগে ডুবে যায়।

আপনি যদি আজকের এই আর্টিকেটি শেষ পর্যন্ত সম্পূর্ণ মনোযোগ পড়তে থাকেন তাহলে আপনি টাইটানিক জাহাজ কেন ডুবেছিল, টাইটানিক জাহাজের বর্তমান অবস্থা, টাইটানিক জাহাজ কেন ডুবেছিল, টাইটানিক জাহাজ কোন দেশ তৈরি করেছিল সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। তাহলে চলুন এখন বেশি দেরি না করে বিস্তারিত আলোচনায় যাওয়া যাক

টাইটানিক জাহাজের ইতিহাস বাংলা

টাইটানিক জাহাজের ইতিহাস অনেক বিড়ল। সেই সম্পর্কে জানার জন্য আপনাকে আজকের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে। তার কারণ আপনি যদি এর শুরু থেকে না জানতে পারেন তাহলে তেমন কিছু বুঝতে পারবেন না। তাহলে চলুন এখন এর ইতিহাস সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
টাইটানিক জাহাজটি তৈরি করা হয়াছিলো ব্রিটিশ যাত্রীবাহীদের জন্য। এটি ছিলো সেই সময়ের সব থেকে বড় ও আধুনিক জাহাজ। এই জাহাজটি সর্বপ্রথম যাত্রা শুরু করে ১৯১২ সালের ১৫ এপ্রিল। এটি তার প্রথম যাত্রা সাউথহ্যাম্পটন থেকে নিউ ইয়র্ক সিটি তে যাওয়ার পরিকল্পনা করে। তবে জাহাজটি দুর্ভাগ্য বশত উত্তর অ্যাটলান্টিক মহাসাগরে বরফের সাথে ধাক্কা লেগে ডুবে যায়।

টাইটানিক জাহাজের নামকরণ

গ্রিক পুরানের শক্তিশালি এক দেবতার নাম ছিলো "টাইটান"। এই দেবতার নাম অনুসারেই এই জাহাজটির নাম রাখা হয় সেই সময়ে "টাইটানিক"। টাইটানিক নামটি হলো এই জাহাজের সংক্ষিপ্ত নাম। এই জাহাজের সম্পূর্ণ নাম হলো "আর এম এস টাইটানিক"। যার অর্থ দারায় এই জাহাজটির নাম "রয়্যাল মেল স্টিমার টাইটানিক"।

টাইটানিক জাহাজের নির্মাণ

এই জাহাজের নির্মাণ কাজ করেন ইংল্যান্ডের একটি কম্পানি। যার নাম ছিলো "হোয়াইট স্টার লাইন"। এই জাহাজের প্রথম নির্মাণ কাজ শুরু করা হয় ১৯০৭ সালে। এই জাহাজটি কাজ একটানা ৫ বছর চলমান ছিলো। যার প্রতিশ্রুতিতে এই জাহাজের নির্মাণ কাজ শেষ হয় ১৯১২ সালে। এই জাহাজের ওজন ৬০ হাজার টন। আর এর দৈর্ঘ্য ছিলো ২৭৫ মিটার।

টাইটানিক জাহাজের যাত্রা

টাইটানিক জাহাজ তার প্রথম যাত্রা সাউদাম্পটন থেকে নিউইয়র্কের উদ্দেশ্যে। এই সময়ে টাইটানিকে মোট যাত্রীর সংখ্যা ছিলো ২২০০ জন। আর তার সাথে ছিলো কয়েকশো জাহাজের শ্রমিক। এই জাহাজের সকল যাত্রী বিভিন্ন জায়গা থেকে উঠেন। যেমন শেরবুর্গ থেকে, আয়ারল্যান্ডের কর্ক পোতাশ্রয় থেকে। এই সকল যাত্রী নিয়ে টাইটানিক তার প্রথম যাত্রা শুরু করে।

টাইটানিক জাহাজের দুর্ঘটনা

১৪ই এপ্রিল দুপুর ২ টার দিকে টাইটানিক জাহাজকে সংকেত পাঠানো হয় যে, তাদের যাত্রা পথে একটি অনেক বড় আইসবার্গ রয়েছে। এই খবর তাদেরকে প্রথমে "America" নামের জাহাজ থেকে পাঠায় এবং তার পরবর্তিতে "Mesaba" নামের অন্য একটি জাহাজ থেকে খবর পাঠানো হয়।

এই সময়ে সেই জাহাজের রেডিওর দায়িত্বে থাকা ব্যাক্তি সেটি গুরুত্বের সাথে না দেখে এই খবর প্রধান কন্ট্রোল রুমে পাঠায় না। যার ফলে বিভিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে টাইটানিক আইসবার্গের অনেক কাছাকাছি চলে আসে। তখন জাহাজের প্রধান ক্যাপ্টেন এই সম্মন্ধ্যে জানতে পারেন।
আইসবার্গ হলো সাগরের বুকে ভাসতে থাকা বরফ। তবে এদের সবথেকে ভয়ংকর ব্যাপার হলো এই বরফ জলের উপরে থাকে মাত্র আট ভাগের একভাগ। জাহাজের প্রধান এই খবর পেয়ে গতিপথ পরিবর্তন করার জন্য দক্ষিণ দিকে ফিরিয়ে নেন। আর তখনই সেই সময়ে জাহাজের পথ পর্যবেক্ষণ কারিরা টাইটানিক জাহাজের সমনেই মূহুর্তের মধ্যেই সেই আইসবার্গ দেখতে পান।

তবে সেটা অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিলো। যার ফলে জাহাজটি ডনদিকে বরফের সাথে ঘসা খেতে থাকে। যার ফলে এই জাহাজের প্রায় ৯০মিটার অংশে চির দেখা যায়। যার জন্য এই জাহাজটি সম্পূর্ণ আস্তে আস্তে ডুবে যেতে থাকে। টাইটানিক জাহাজটি যে জায়গাতে ডুবে গিয়েছিলো সেই জায়গার নাম হলো "গ্রেট ব্যাংকস অফ নিউফাউন্ডল্যান্ড"।

জাহাজটি ডুবে যাওয়া

জাহাজটি মাত্র ২০ মিনিটেই সম্পূর্ণ ডুবে যায়। রাত ২ টা - ২.২০ মিনিটেই সম্পূর্ণ ডুবে যায়। অর্থাৎ আটলান্টিক সাগরের বুকে হারিয়ে যায়। টাইটানিক ডুবে যাওয়ার প্রায় ১ঘন্টা ৪০ মিনিট পরে সেই জাহাজের যাত্রি সমুদ্রের বুকে ভেসে বেরানো প্রায় ৭০০ জন যাত্রীকে উদ্ধার করে। আর তাদেরকে নিয়ে ৮.৩০ মিনিটের দিকে নিউইয়র্ক চলে যায়। যেই জাহাজটি যাত্রীদের উদ্ধার করেছিলো সেই জাহাজটির নাম ছিলো "দি কারপাথিয়া"।

তথ্য সূত্রঃ Wikipedia

টাইটানিক জাহাজের উচ্চতা কত

টাইটানিক জাহাজের উচ্চতা কত ছিলো এই নিয়ে অনেকেই অনেক দিধায় থাকেন। তারা অনেক খোঁজাখুঁজির পরেও সঠিক তথ্যটি জানতে পারনে না। এই পর্যায়ে আমরা সকলেই টাইটানিক জাহাজের উচ্চতা কত ছিলো সেই সম্পর্কে জানতে পারবো। তাহলে চলুন জেনে নাওয়া যাক।

টাইটানিক জাহাজের উচ্চতা ছিলো ১০৪ ফুট ( ৩২ মিটার )। আর এর ওজন ছিলো ৬০ হাজার টন। এবং দৈর্ঘ্য ছিলো ২৭৫ মিটার। যা ছিলো সেই সময়ের সবথেকে বড় যাহাজ। সেই সময়ে এটিই ছিলো সবথেকে আধুনিক জাহাজ।

টাইটানিক জাহাজ কোন দেশ তৈরি করেছিল

টাইটানিক জাহাজ ইংল্যান্ড তৈরি করে। এই জাহাজ তৈরির কম্পানির নাম ছিলো "হোয়াইট স্টার লাইন"। টাইটানিক জাহাজের প্রথম নির্মাণ কাজ শুরু করা হয় ১৯০৭ সালে। আর এই কাজ একটানা ৫বছর চলমান থাকে। যার ফলে ১৯১২ সালে এই জাহাজের সকল কাজ শেষ হয়। সেই সময়ে এই জাহাজটি নির্মাণ করতে মোট খরচ হয়েছিলো ৭৫ লাখ ডলার।

টাইটানিক জাহাজ কেন ডুবেছিল

টাইটানিক জাহাজ কেন ডুবেছিল এই সম্পর্কে অনেকেরই অজানা। এখন আমরা আপনাকে এই প্রশ্নের সঠিক তথ্য জানাবো। যাতে করে আপনি সকল সঠিক তথ্য জানতে পারেন। তাহলে চলুন এখন বেশি দেরি না করে বিস্তারিত আলোচনায় যাওয়া যাক।

টাইটানিক জাহাজ ডোবার পেছনে মূল দায়ি করা হয় নতুত কর্মিদের কাজের গাফিলতি কে। আর তাছাড়াও আরো অনেক কারণ উল্লেক করা হয়েছে। কোথাও কোথাও বলা হয়েছে যে, সামদ্রিক ঝরের কারণে টাইটানিকের যোগাগো ব্যাবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। যার জন্য এই জাহাজে থাকা চুম্বকীয় কম্পাস সঠিকভাবে কাজ করে না।যার ফলে ভুল দিক নির্দেশনায় চলে যায়। যার ফলে দুর্ঘটনায় পরে।

তবে এই সকল কথা বলা হলেও টাইটানিক জাহাজ ডোবার আসল কারণ ছিলো আটলান্টিক মহাসাগরের আইসবার্গ। টাইটানিক জাহাজের পরিচালকদের অসাবধানতার কারণে এই আইসবার্গের সাথে জাহাজটি ধাক্কা খায়। যার ফলে প্রায় ৯০ মিটার জুরে এই চির সৃষ্টি হয়। আর সেই কারণে টাইটানিকের ভেতরে পানি প্রবেশ করে জাহাজটি আস্তে আস্তে ডুবে যায়।

টাইটানিক জাহাজের বর্তমান অবস্থা

এতক্ষণ তো আমরা টাইটানিক জাহাজ কেন ডুবেছিল সেই সম্পর্কে জানলাম। তাহলে চলুন এখন আমরা জেনে নেই টাইটানিক জাহাজের বর্তমান অবস্থা কি। কোথায় আছে এই জাহাজটি।

টাইটানিক জাহাজ বর্তমানে আটলান্টিক মহাসাগরের ৪১°৪৩′৫৫″ উত্তর ৪৯°৫৬′৪৫″ পশ্চিমে অবস্থান করছে। এই জাহাজটির পশ্চিমদিকের বর্তমান অবস্থা খুবই শোচনীয়। এই জাহাজটি প্রায় এখন একটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। টাইটানিক ডুবে যাওয়ার সাথে সাথে অনেক মূল্যবান বস্তু ও তার সাথে ডুবে গেছে।

এই জাহাজটি যেই জায়গায় ডুবে গিয়েছিলো বা এখনো পরে আছে সেই জায়গাটির নাম হলো "গ্রেট ব্যাংকস অফ নিউফাউন্ডল্যান্ড"। এই জাহাজটি বর্তমানে এখনো সেখানের প্রায় ১২,৪৬৭ ফুট পানির গভিরে পড়ে রয়েছে।

টাইটানিক জাহাজ নিয়ে সাধারণ জিজ্ঞাসা

প্রশ্নঃ টাইটানিক জাহাজ ডুবতে কত সময় লেগেছিল
উত্তরঃ টাইটানিক জাহাজ ডুবতে মাত্র ২০ মিনিট সময় লেগেছিল।

প্রশ্নঃ টাইটানিক জাহাজ ডুবে যায় কত সালে?
উত্তরঃ টাইটানিক জাহাজ ডুবে যায় ১৯১২ সালের ১৪ই এপ্রিল।

প্রশ্নঃ টাইটানিক জাহাজের ডুবে যাওয়ার কারণ কি?
উত্তরঃ টাইটানিক জাহাজের ডুবে যাওয়ার প্রধান কারণ ছিলো আটলান্টিক মহাসাগরের আইসবার্গের সাথে সংঘর্ষ হওয়া।

প্রশ্নঃ টাইটানিক জাহাজে কতজন মানুষ মারা গিয়েছিল
উত্তরঃ টাইটানিক জাহাজ ডুবে যাওয়ার পরে মার্কিন কমিটির মতে ১,৫১৭ জন মারা যায়। আর ব্রিটিশ প্রতিপক্ষ নির্ধারণ করেন ১,৫০৩ জন মারা যায়।

প্রশ্নঃ টাইটানিক জাহাজ কত নিচে?
উত্তরঃ টাইটানিক জাহাজ ১২,৪৬৭ ফুট নিচে সমাহিত করা রয়েছে।

প্রশ্নঃ বর্তমানে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় জাহাজের নাম কি?
উত্তরঃ বর্তমানে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় জাহাজের নাম হলো "ওয়েসিস অফ দ্য সিস"।

প্রশ্নঃ টাইটানিক জাহাজ বর্তমানে কোথায় আছে?
উত্তরঃ টাইটানিক জাহাজ বর্তমানে নিউফাউন্ডল্যান্ড উপকূল থেকে প্রায় ৬৪০ কিলোমিটার দক্ষিণপূর্ব দিকে সমূদ্রের ১২,৪৬৭ মিটার গভিরে রয়েছে।

শেষ কথা

আজকে আমাদের এই আর্টিকেলে প্রধান আলোচনার বিষয় ছিলো টাইটানিক জাহাজের ইতিহাস বাংলা সম্পর্কে। আশা করছি আপনি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পরে উক্ত বিষয় সম্পর্কে বিস্তাইরত জানতে পেরেছেন। এই রকম তথ্যবহুল আরো আর্টিকেল প্রতিদিন পড়তে আমাদের সাথেই থাকুন। গুগল নিউজে চাইলে ফলো করে রাখতে পারেন। ফলে সকল নতুন আর্টিকেলের নোটিফিকেশান সবার আগেই পেয়ে যাবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url