ভিটামিন সি এর ১০টি উপকারিতা ও অপকারিতা জেনে নিন

আজকের পোস্টটিতে আমরা ভিটামিন সি এর উপকারিতা ও অপকারিতা ও ভিটামিন সি বেশি খেলে কি হয় এ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করব। তাই আপনারা যদি ভিটামিন সি এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান তাহলে পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
ভিটামিন সি এর উপকারিতা ও অপকারিতা
আশা করছি আমার লেখা ভিটামিন সি এর উপকারিতা ও অপকারিতা আর্টিকেলটি পড়ে আপনি ভিটামিন সি সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানতে পারবেন। তাই ভিটামিন সি সম্পর্কে জানতে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন।
পোস্টসূচিপত্রঃ

ভূমিকা

আমাদের শরীরের বিভিন্ন রকম সমস্যা সমাধান করতে ভিটামিন সি এর তুলনা অতুলনীয়। যেমন রোগ প্রতিরোধ বৃদ্ধির কথা বলতে গেলেই প্রথমেই ভিটামিন সি এর কথা মাথায় আসে। আমাদের শরীরের ভেতরের বিভিন্ন রকম কার্যকলাপ করার ক্ষেত্রে ভিটামিন সি অনেক গুরুত্ব পূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই অবশ্যই আমাদের জানতে হবে ভিটামিন সি এর সকল উপকারিতা ও অপকারিতাগুলো সম্পর্কে।

কারণ প্রতিটা ভিটামিন আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভিটামিন মাত্রাধিক হয়ে গেলে কোন কোন সময় সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই সকল ভিটামিনের উপকারিতা ও অপকারিতা উভয় দিক আমাদের জানা উচিত।
আপনি যদি আজকের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকেন তাহলে আপনি ভিটামিন সি আমাদের শরীরে কি কি কাজ করে, ভিটামিন সি জাতীয় ফল অথবা সবজি কোনগুলো, ভিটামিন সি এর অভাবে কি কি হতে পারে, আবার অতিরিক্ত মাত্রায় ভিটামিন সি খেলে কি কি ক্ষতিগুলো হতে পারে সেই সম্পর্কে সকল কিছু আপনি জানতে পারবেন। তাই অবশ্যই সেই সকল বিষয় সম্পর্কে জানার জন্য সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়তে হবে মনোযোগ সহকারে।

ভিটামিন সি এর কাজ | ভিটামিন সি এর উপকারিতা ও অপকারিতা

আমরা সকলেই জানি ভিটামিন সি আমাদের শরীরে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে থাকে। ভিটামিন সি আমাদের রোগ প্রতিরোধ বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। আমাদের ত্বকের ক্ষেত্রেও ভিটামিন সি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যেহেতু ভিটামিন সি আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ তাই আমাদের অবশ্যই আমাদেরকে ভিটামিন সি এর সকল কাজগুলো সম্পর্কে জানতে হবে।

ভিটামিন সি এর কাজ হচ্ছে আমাদের শরীরের রক্তনালী ও রক্তকোষ গঠন করা। আমাদের শরীরের হাড়ের গঠন মজবুত করতে ভিটামিন সি এর অবদান অনেক বেশি। আমাদের শরীরের সাধারণ অসুখ বিসুখ যেমন জ্বর, সর্দি, কাশি সারানোর ক্ষেত্রেও ভিটামিন সি কাজ করে থাকে। এছাড়াও আমাদের শরীরের ক্লান্তি অবসর দূর করতে ভিটামিন সি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

ভিটামিন সি জাতীয় ফল

আমাদের দেশে খাবারে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি পাওয়া যায়। সে সকল খাবার খেয়ে আমরা খুব সহজেই আমাদের শরীরের ভিটামিন সি এর অভাব পূরণ করতে পারব। আর আমরা জানি যে ভিটামিন সি আমাদের শরীরের জন্য কতটা প্রয়োজনীয়। ভিটামিন সি জাতীয় ফল এর তালিকা নিচে দেওয়া হল।

লেবুঃ ভিটামিন সি এর কথা বললেই সর্ব প্রথম ধাপে যেই খাবার এর কথা মাথায় আসে তা হচ্ছে লেবু। লেবুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি পাওয়া যায়। লেবুতে যে পরিমাণে ভিটামিন সি পাওয়া যায় সেই পরিমাণ ভিটামিন সি খুব কমই খাবার এর ভেতর পাওয়া যাই। তাই শরীরের ভিটামিন সি এর অভাব পূরণ করতে নির্দ্বিধায় আপনি লেবু খেতে পারেন। প্রতিদিন ভাতের সাথে এক টুকরো লেবু খেলে তা আপনার শরীরের জন্য খুবই উপকারী হিসাবে কাজ করবে।

কেজি পেয়ারাঃ আমাদের দেশে প্রায় সব জায়গায় কমবেশি কেজি পেয়ারা দেখতে পাওয়া যায়। কিন্তু আমরা অনেকে জানিনা যে ভিটামিন সি এর আর একটি মূল খাবার কেজি পেয়ারা। কেজি পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি উপস্থিত রয়েছে। তাই আপনি ভিটামিন সি এর ঘাটতি পূরণ করার জন্য কেজি পেয়ারা খেতে পারেন।

আমলকিঃ আমরা সকলেই কমবেশি আমলকি ফল চিনি। আর সেই আমলকি ফল ই হচ্ছে ভিটামিন সি এর ভান্ডার। আপনার শরীরে যদি ভিটামিন সি এর ঘাটতি দেখা দেয় তাহলে আপনি নিঃসন্দেহে আমলকি খেতে পারেন। আমলকি হবে আপনার শরীরে ভিটামিন সি যোগানোর একটি খাবার।
কমলাঃ কমলা তে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। তাই আপনি ভিটামিন সি এর পরিমাণ আপনার শরীরে বাড়াতে চাইলে অবশ্যই খাদ্য তালিকায় কমলা রাখুন। কমলা আপনার ত্বকের ক্ষেত্রেও অনেক বেশি কাজ করে থাকে।

আমঃ আমাদের সকলের পছন্দের একটি ফল হচ্ছে আম। আমাদের দেশে কেমন মানুষ কম আছে যে আম খেতে পছন্দ করে না। কারণ স্বাদের দিক থেকে আম অতুলনীয়। কিন্তু আপনি এটা জানলে অবাক হবেন আম আম এর ভেতর রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। যা আপনার শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

আমড়াঃ আমরা সকলেই এই ফল চিনি। সাধারণত গ্রাম অঞ্চলে এই ফল বেশি দেখতে পাওয়া যায়। আমড়া তে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি। যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। তাই ভিটামিন সি এর চাহিদা পূরণ করতে আপনি আমড়া খেতে পারেন।

এ সকল ফল ছাড়াও আরো ফল রয়েছে যেগুলোতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি পাওয়া যায় সেগুলো নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
  • তরমুজ
  • জামরুল
  • জলপাই
  • বড়ই
  • মাল্টা
  • জাম্বুরা
  • বাঙ্গি
  • স্ট্রবেরি

ভিটামিন সি জাতীয় সবজি

আমাদের বাংলাদেশে সাধারণত অনেক ধরনের শাকসবজি উৎপাদন করা হয়। আর সে সকল শাকসবজি তে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন উপস্থিত থাকে। যা আমাদের শরীরের জন্য খুব বেশি উপকারী। তাই আসুন ভিটামিন সি জাতীয় সবজি কোনগুলো জেনে নেই।
  • কাঁচা মরিচ
  • ক্যাপসিকাম
  • ব্রকলি
  • মটরশুটি
  • বাঁধাকপি
  • ফুলকপি
  • র‍্যাডিস
  • লেটুস পাতা
  • টমেটো
  • পালং শাক
  • ঢেঁড়স
  • মিষ্টি আলু
  • গাজর
  • পাটের শাক
  • পুঁইশাক

ভিটামিন সি এর উপকারিতা ও অপকারিতা

ভিটামিন সি আমাদের শরীরের বিভিন্ন রকম রোগ প্রতিরোধ করে থাকে। তাই অবশ্যই আমাদের শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন সি থাকা দরকার। আমাদের সকলের শরীরের জন্য ভিটামিন খুবই প্রয়োজনীয়। কিন্তু যেকোন ভিটামিন এর যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি এর অপকারিতাও রয়েছে। তাই আমাদের অবশ্যই ভিটামিন সি এর সকল উপকারিতা ও অপকারিতাগুলো সম্পর্কে জানা উচিত।

ভিটামিন সি এর সকল উপকারিতাগুলো নিচে তুলে ধরা হলো। ভিটামিন সি এর সকল উপকারিতাগুলো হলঃ

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ ভিটামিন সি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। ভিটামিন সি এর অভাবে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। তাই ভিটামিন সি যুক্ত খাবার খেয়ে আমরা খুব সহজে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারব।

রক্তনালী ও রক্তকোষ গঠন করেঃ ভিটামিন সি আমাদের শরীরের রক্তের সমস্যা সমাধান করতেও সাহায্য করে থাকে। ভিটামিন সি আমাদের রক্তনালী ও নতুন রক্ত কোষ গঠন করতে খুব বেশি সাহায্য করে থাকে। তাই আমাদের শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন সি থাকা খুবই জরুরী।

হাড় গঠনে সহায়তাঃ ভিটামিন সি আমাদের হাড়ের জন্য খুবই উপকারী। ভিটামিন সি আমাদের আহারের গঠনে সহায়তা করে থাকে। আমাদের শরীরের হাড়ের গঠনের জন্য অবশ্যই ভিটামিন সি জাতীয় খাবার আমাদের নিয়মিত খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে।

ক্ষতস্থান নিরাময় করেঃ ভিটামিন সি আমাদের শরীরের যেকোনো ক্ষতস্থান খুব দ্রুত সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে থাকে। আপনার শরীরে যদি ভিটামিন সি এর ঘাটতি থাকে তাহলে যেকোনো ক্ষতস্থান নিরাময় হতে অনেক বেশি সময় লাগে। কিন্তু শরীরে পর্যন্ত পরিমাণ ভিটামিন সি থাকলে ক্ষতস্থান খুব দ্রুত শুকিয়ে যায়।

দাঁতের মাড়ি সুস্থ রাখতেঃ ভিটামিন সি আমাদের দাঁতের মাড়ি সুস্থ রাখতে খুব বেশি সাহায্য করে থাকে। অনেক সময় দেখা যায় আমাদের দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্ত ঝরছে এটি হয়ে থাকে সাধারণত যদি ভিটামিন সি এর অভাব হয়। তাই আপনার মাড়ির কোন রকম সমস্যা হলে ভিটামিন সি জাতীয় খাদ্য খেতে পারেন।

ওজন কমাতে সাহায্য করেঃ ভিটামিন সি আমাদের শরীরের ওজন কমাতে খুব বেশি সাহায্য করে থাকে। আপনার শরীরে যদি ভিটামিন সি এর ঘাটতি থাকে তাহলে সহজে আপনার ওজন কমবে না। কিন্তু শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন সি থাকলে ব্যায়াম করার মাধ্যমে সহজেই ওজন কমানো যায়।

চুল বৃদ্ধি করতে সহায়তা করেঃ ভিটামিন সি অভাবে অনেক সময় আমাদের চুলের আগা ফেটে যায় বা চুলের গোড়া শুষ্ক হয়ে যায়। যার ফলে আমাদের অতিরিক্ত পরিমাণে চুল পড়ে যায়। তাই চুল এর ঝরে যাওয়া রোধ করতে অবশ্যই শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সি থাকতে হবে।
আরো পড়ুনঃ 
এতক্ষণ আমরা সকলেই ভিটামিন সি এর সকল উপকারিতা গুলো সম্পর্কে জানলাম। এখন আমরা ভিটামিন সি এর অপকারিতা গুলো সম্পর্কে জানব। সকল জিনিসেরই অনেক ভাল দিক এবং কিছু খারাপ দিক থাকে। ভিটামিন সি ও তার ব্যতিক্রম নয়। তাহলে চলুন এখন আমরা ভিটামিন সি এর অপকারিতা গুলো সম্পর্কে জেনে নেই।

ভিটামিন সি এর সকল অপকারিতা গুলো হলঃ

ভিটামিন সি আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী তা আমরা সকলেই জানি। আমরা মনে করি ভিটামিন সি আমাদের শরীরের শুধু উপকার করে। কিন্তু না ভিটামিন সি এর উপকারিতা এবং অপকারিতা এই উভয় দিকই বিদ্যমান রয়েছে। আসুন তাহলে এখন ভিটামিন সি এর অপকারিতা সম্পর্কে জেনি।

কিডনি সমস্যাঃ অতিরিক্ত ভিটামিন সি খাবার ফলে আমাদের কিডনিতে সমস্যা দেখা দিতে পারে। কারণ ভিটামিন সি তে রয়েছে অক্সালেটস যা আমাদের কিডনিতে পাথর হতে সাহায্য করে। তাছাড়াও আমাদের কিডনির ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। তাই অধিক মাত্রায় ভিটামিন সি গ্রহণ করা ঠিক নয়।

পাকস্থলীর সমস্যাঃ আপনি যদি আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি কিংবা অন্য কোন কারণে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি খেয়ে থাকেন তাহলে তা আপনার জন্য হিতে বিপরীত হতে পারে। কারণ একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ভিটামিন সি আমাদের শরীরে মলমূত্রের দ্বারা বের হয়ে যায়। কিন্তু অধিক মাত্রায় ভিটামিন সি গ্রহণ করলে তা আপনার পাকস্থলীর জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে।

বদহজম এর সমস্যাঃ অতিরিক্ত ভিটামিন সি খাওয়ার ফলে আপনার বমি বমি ভাব হতে পারে এবং অতিরিক্ত ভিটামিন সি আপনার শরীরের বদহজমের সমস্যা সৃষ্টি ও গ্যাসের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তাই ভিটামিন সি খাওয়ার পূর্বে একটু বুঝে শুনে খেতে হবে।

ভিটামিন সি এর অভাবে কি হয়

ভিটামিন সি এর অভাবে কি হয় তা আমরা অনেকেই জানিনা। ভিটামিন সি এর অভাবে আমাদের শরীরে বিভিন্ন রকম সমস্যা হতে পারে। তাই সেই সকল সমস্যা একটু মনোযোগ দিয়ে খেয়াল করলে আমরা বুঝতে পারবো আমাদের শরীর এ ভিটামিন সি এর অভাব হয়েছে। আসুন আমরা জেনে নিই ভিটামিন সি এর অভাবে কি কি হতে পারে।

থাইরয়েডের সমস্যাঃ আপনার শরীরে যদি ভিটামিন সি এর অভাব দেখা দেয় তাহলে আপনার থাইরয়েডের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। থাইরয়েডের সমস্যা দেখা দিলে আপনার দ্রুত ওজন কমে যাবে খাবারের প্রতি অনীহা দেখা দিবে এবং বুকের ভেতর ছটফট করবে। যদি এরকম সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে আপনি বুঝতে পারবেন হয়তো আপনার শরীরে ভিটামিন সি এর অভাব হয়েছে।

ত্বকের সমস্যাঃ ভিটামিন সি এর অভাবে আপনার ত্বকের বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। আপনার ত্বকে যদি বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখা দেয় তাহলে আপনাকে বুঝতে হবে আপনার শরীরে ভিটামিন সি এর অভাব রয়েছে। আপনার ত্বকের বাইরের অংশ পাতলা ও ফ্যাকাসে হয়ে যেতে পারে কিংবা ত্বক জ্বালাপোড়া করতে পারে ও চুলকাতে পারে।

দাঁতের মাড়ি থেকে রক্ত পড়াঃ অনেক সময় দাঁতের মাড়ি থেকে রক্ত ক্ষরণ হয়। দাঁতের মাড়ি থেকে রক্ত পড়া এটি অন্য কোন কারণে হয়ে থাকে না।এটির একমাত্র কারণ হচ্ছে শরীরে ভিটামিন সি এর অভাব। তাই যদি আপনার দাঁতের মাড়ি থেকে রক্ত পড়ে তাহলে ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খেতে পারন।

রক্ত স্বল্পতাঃ আমাদের শরীরে আয়রন শোষণের জন্য ভিটামিন সি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই শরীরে ভিটামিন সি এর অভাব দেখা দিলে শরীরে আয়রন এর পরিমাণ কমে যায়। ফলে আমাদের শরীরে রক্ত দেখা দেয়। ভিটামিন সি আমাদের শরীরে রক্তের কোষ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

ক্ষতস্থান দীর্ঘদিন থাকাঃ অনেক সময় আমাদের শরীরে কোন স্থান কেটে গেলে বা ক্ষত হলে সহজে তা ভালো হতে চাই না। যদি এমনটা হয় তাহলে অবশ্যই আপনাকে ভাবতে হবে আপনার শরীরে ভিটামিন সি এর অভাব রয়েছে। সেহেতু আপনার খাদ্য তালিকায় ভিটামিন সি এর পরিমাণ বাড়াতে হবে।

ভিটামিন সি বেশি খেলে কি হয়

সুপ্রিয় পাঠাক, আমরা সকলেই যে এতক্ষণে ভিটামিন সি এর সকল উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো তার সাথে সাথে কোন কোন খাবার খেলে ভিটামিন সি পাওয়া যায় সেগুলো সম্পর্কে জানতে পারলাম। এখন আপনারা যদি এই উপকারিতার কথা ভেবে অতিরিক্ত মাত্রায় ভিটামিন সি খেয়ে ফেলেন তাহলে কি হবে এটা সম্পর্কে জানেন কি। যদি না জেনে থাকেন তাহলে চলুন এখনই জেনে নেই আমরা সকলেই।
আমরা সকলেই জানি অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো নয়। তেমনি ভিটামিন সি এর ক্ষেত্রেও এর কোন ব্যতিক্রম নেই। ভিটামিন সি জাতীয় খাবার আপনি যদি অতিরিক্ত গ্রহণ করে ফেলেন তাহলে আপনার শরীরের ক্ষেত্রে কিছু বিরূপ প্রভাব দেখাতে পারে। সেই সকল বিরূপ প্রভাব গুলো নিম্নে বর্ণনা করা হলো বিস্তৃতভাবে।
  • হজমের সমস্যা
  • আয়রনের মাত্রা বৃদ্ধি
  • ডায়রিয়া
  • কিডনিতে স্টোন
  • বমি বমি ভাব হওয়া অথবা বমি হওয়া
  • বুকে জ্বালাপোড়া করা
  • তলপেটে ব্যথা হওয়া
  • মাথাব্যথা হওয়া
  • অনিদ্রা
আরো পড়ুনঃ 
হজমের সমস্যাঃ আপনি যদি শরীরের ভিটামিন সি এর যোগান দেওয়ার জন্য অতিরিক্ত মাত্রায় ভিটামিন সি এর সাপ্লিমেন্ট খেয়ে থাকেন তাহলে আপনার খাবার হজমের সমস্যা হতে পারে। আপনি যদি দিনে ২ হাজার মিলিগ্রাম এর এর বেশি মাত্রায় ভিটামিন সি খেয়ে ফেলেন তাহলে আপনার ডায়রিয়া বমি সহ আরো অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই চেষ্টা করুন এর থেকে কম মাত্রার গ্রহণ করার।

আয়রনের মাত্রা বৃদ্ধিঃ আপনি হয়তো জানেন না ভিটামিন সি হল আয়রনের ক্ষেত্রে খুব ভালো একটি শোষক। তাই আপনি যদি অতিরিক্ত মাত্রা ভিটামিন সি খেয়ে ফেলেন তাহলে আপনার শরীরে আয়রনের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে। যার ফলে আপনার লিভার, প্যানক্রিয়াস অথবা থাইরয়েড এর ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

কিডনিতে স্টোনঃ ভিটামিন সি রক্তের সাথে একবারে মিশে যায় না। যার ভালো অতিরিক্ত ভিটামিন সি পিস্টন হয়ে অনেক সময়ই জমা হয় কিডনিতে। যার ফলে আমাদের শরীরের কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি থাকে। তাই আপনি যদি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য ভিটামিন সি খেয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই সেটা পরিমাণমতো গ্রহণ করুন।

ভিটামিন সি এর সম্পর্কে সাধারণ জিজ্ঞাসা (FAQ)

প্রশ্নঃ প্রতিদিন ভিটামিন সি খেলে কি হয়?
উত্তরঃ প্রতিদিন যদি আপনি ভিটামিন সি খান তাহলে আপনার ৫টি স্বাস্থ্য উপকারিতা হবে। সেগুলো হলো
  • যেকোন রোগের সংক্রমণ মোকাবেলার শক্তি বৃদ্ধি করবে
  • কোষেকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করবে
  • স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাস করবে
  • শরীরের যেকোন ক্ষত তাড়াতাড়ি শুকাতে সাহায্য করবে
  • শরীরের আয়রন শোষণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে
প্রশ্নঃ ভিটামিন সি এর সবচেয়ে ভালো রূপ কোনটি?
উত্তরঃ প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ভিটামিন সি এর সবচেয়ে ভালো হলো Liposomal Vitamin C 2000mg Liquid

প্রশ্নঃ প্রতিদিন ভিটামিন সি খাওয়া কি ক্ষতিকর?
উত্তরঃ একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের জন্য প্রতিদিন ভিটামিন সি এর পরিমাণ হলো 2,000 মিলিগ্রাম। এর থেকে সামান্য কিছু বেশি খেলেও তেমন একটা ক্ষতি নেই। তবে বেশি পরিমাণে গ্রহণ না করাই ভালো।

প্রশ্নঃ ভিটামিন সি এর অভাবে কি কি রোগ হতে পারে?
উত্তরঃ ভিটামিন সি এর তিব্র অভাবে স্কার্ভি হয়। এছাড়াও আরো যেসকল সমস্যাগুলি হতে পারে সেগুলো হলো
  • রক্তস্বল্পতা
  • ক্লান্তি
  • স্বতঃস্ফূর্ত রক্তপাত
  • শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে ব্যথা
  • পা ফুলে যাওয়া
  • মাড়িতে ঘা
  • দাঁতের ক্ষতি হতে পারে
প্রশ্নঃ ভিটামিন সি এর অভাবে সুস্থ হতে কতদিন লাগে?
উত্তরঃ ভিটামিন সি এর অভাবে সুস্থ হতে 1 থেকে 2 সপ্তাহ পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।

প্রশ্নঃ ভিটামিন সি এর অভাবে কি মাথা ঘোরে?
উত্তরঃ হ্যা। ভিটামিন সি এর অভাবে মাথা ঘোরে। এছাড়াও আরো বিভিন্ন ধরণের সমস্যা হতে পারে। যেমন
  • ক্লান্তি
  • ফ্যাকাশে ভাব
  • শ্বাসকষ্ট
  • মাথা ঘোরা
  • ওজন হ্রাস

শেষ কথা | ভিটামিন সি এর উপকারিতা ও অপকারিতা

আজকের আমাদের এই আর্টিকেলের প্রধান আলোচনার বিষয় ছিলো ভিটামিন সি এর উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো সম্পর্কে। আশা করছি আপনি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ে উক্ত বিষয় সম্পর্কে একটি ক্লিয়ার ধারণা পেয়েছেন। এই রকম আরো তথ্যবহুল আর্টিকেল প্রতিদিন পড়তে আমাদের সাথেই থাকুন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url