১ বিটকয়েন সমান কত টাকা

প্রিয় পাঠক আপনাদের মধ্যে অনেকে আছে যারা অনলাইনে ট্রেডিং করে থাকেন। তাদের মধ্যে এমন অনেক আছে বিশেষ করে যারা নতুন তারা বিটকয়েন একাউন্ট খুলতে পারেনা অর্থাৎ বিটকয়েন একাউন্ট খোলার নিয়ম জানেনা। আজকের পোস্টের মাধ্যমে আপনি কিভাবে বিটকয়েন একাউন্ট খুলবেন তার উপায় এবং ১ বিটকয়েন সমান কত টাকা তা আলোচনা করা হবে।
বিটকয়েন একাউন্ট খোলার নিয়ম - ১ বিটকয়েন সমান কত টাকা
প্রিয় ভাইয়েরা আপনারা যদি বিটকয়েন কিনে রাখতে চান তাহলে অবশ্যই বিটকয়েন একাউন্ট খুলতে হবে অবশ্যই তার আগে বিটকয়েন একাউন্ট খোলার নিয়ম জানতে হবে যা আমার এই পোস্টে আলোচনা করব।

ভূমিকা

বর্তমানে অনেকেই বিটকয়েন কিনে লাখ লাখ টাকা ইনকাম করছে। তবে এই বিটকয়েন কিনার জন্য অবশ্যই বিটকয়েন একাউন্টের প্রয়োজন হয়। বিটকয়েন কিনে আপনার ট্রেডিং করে বাই এবং সেল ।করে অনেক টাকা করতে পারবেন। 
তবে তার আগে আপনাদের অবশ্যই বিটকয়েন আদান প্রদান করার জন্য বিটকয়েন একাউন্ট খুলতে হবে এবং খোলার নিয়ম সম্পর্কে জানতে হবে তা না হলে আপনি বিটকয়েন বিক্রি বা কিনতে পারবেন না। তাই আজকের পোস্টটি পড়লে আশা করি আপনি বিটকয়েন একাউন্ট খুলতে পারবেন।

বিটকয়েন কি ?

বিটকয়েন কোন দেশের কারেন্সি নয়, এটি মূলত ডিজিটাল কারেন্সি যা অন্যান্য কয়েনের মতো হাতে নেওয়া যায় না শুধুমাত্র ব্যালেন্স দেখা যায় যা মূলত বিটকয়েন আকারে থাকে।এই মুদ্রার বাস্তব কোন রুপ নেই। বিটকয়েন সবচেয়ে পরিপুর্ণ এবং সার্বিক ক্রিপ্টোকারেন্সি হিসেবে পরিচিত। আপনি যেমন কয়েন হাতে নিয়ে খরচ করতে পারেন, তেমনি বিটকয়েন হাতে নিয়ে খরচ করা যায় না। এর জন্য প্রয়োজন হয় ডিজিটাল মাধ্যমে আদান প্রদান করা। 
বিটকয়েন মূলত ডিজিটাল কারেন্সি অর্থাৎ ইলেকট্রনিক ক্রিপ্টোকারেন্সি। তবে এবার আপনার মাথায় আসতে পারে বিটকয়েনের জনক কে অথবা এর মালিক কে। তবে বলা যায় বিটকয়েনের কোন মালিক নেই এটি অটোমেটিক তার নিজ গতিতে ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে চলতে থাকে। তাহলে আপনার বুঝতে পারছেন বিটকয়েন কি।

বিটকয়েন ওয়ালেট কি?

বিটকয়েন ওয়ালেট মূলত বিটকয়েন ট্রান্সফার বা আদান প্রদান করার জন্য ব্যবহার করা হয়। আপনি যদি বিটকয়েন বিক্রি করতে চান বা কিনতে চান তাহলে অবশ্যই বিটকয়েন একাউন্ট বা বিটকয়েন ওয়ালেট খোলার প্রয়োজন হয়। এই ডিজিটাল মাধ্যমে বিটকয়েন আদান প্রদান করাকে বিটকয়েন ওয়ালেট বলা হয়ে থাকে। 

বিটকয়েন ওয়ালেট কিপ্ট কারেন্সি কয়েন এক্সেস করতে সক্ষম এবং এটি বিটকয়েন গ্রহণ ও পাঠাতে সক্ষম। তাহলে বুঝতে পারলেন বিটকয়েন ওয়ালেটের মাধ্যমে আপনারা ভার্চুয়াল করেন অর্থাৎ ক্রিপ্টো কারেন্সি কয়েন গুলো সহ বিটকয়েন আদান প্রদান করতে পারবেন।

১ বিটকয়েন সমান কত টাকা

আপনারা কি জানেন একটি বিটকয়েনের দাম অনেক বেশি যা কিনা কল্পনার বাইরে। বিটকয়েন যখন প্রথম প্রচলন হয় ২০০৮ ও ২০০৯ সালের দিকে তখন বিটকানের দাম এত ছিল না। তখন আপনি এক ডলার দিয়ে ১৪০০ টি বিটকয়েন কিনতে পারতেন। তাহলে বুঝতে পারতেন তখনকার সময়ে আপনি পয়সা তেও বিটকয়েন কিনতে পারতেন।

তবে বর্তমানে ২০২৩ সালে এসে বিটকয়েনের দাম এসে দাঁড়ায় ৩৮ হাজার মার্কিন ডলার। যা বাংলা টাকায় রূপান্তর করলে ৪০ লাখ টাকার ও বেশি হয়ে দাঁড়ায়। তবে গবেষণায় দেখা গেছে ভবিষ্যতে বিটকয়েনের দাম ১ লাখ ডলার পর্যন্ত ছাড়িয়ে যেতে পারে যা আমাদের কল্পনার বাইরে। যা বাংলা টাকায় করলে ১ কোটি টাকার বেশি হয়ে দাঁড়ায়। তাহলে বুঝতে পারছেন ১ বিটকয়েন সমান কত টাকা। বলতে গেলে বর্তমানে ১ বিটকয়েন সমান ৭৫ লাখ টাকা

বিটকয়েন থেকে ইনকাম

বিটকয়েন এমন একটি কয়েন যা থেকে আপনারা ইনকাম করতে পারবেন। আপনারা কেউ যদি বিটকয়েন একাউন্ট খুলে বিটকয়েন কিনে ভবিষ্যতের জন্য রেখে দিতে পারেন তাহলে অবশ্যই থেকে দুই থেকে তিন গুণ বেশি লাভ করতে পারবেন। এছাড়া প্রতিনিয়ত এ বিটকয়েন কিনে এবং বিক্রি করে আপনি অনেক টাকা আয় করতে পারবেন। বর্তমানে বিটকয়েন কেনাবেচা করে বাংলাদেশের অনেক মানুষ সচ্ছল হচ্ছে এবং ইনকাম করতে পারে। 

বিশেষ করে যারা ট্রেডিং করেন তারা অবশ্যই জানেন বিটকয়েন থেকে কিভাবে আয় করা যায় বা ইনকাম করা যায়। আপনারা ট্রেডিং করে বিটকয়েন থেকে অনায়াসে ইনকাম করতে পারবেন। বিটকয়েনের বিনিময়ের মাধ্যমে ইনকাম করতে পারবেন। এছাড়া বিটকয়েন স্টক করে বহুদিন রেখে দিয়ে আয় করতে পারবেন। আপনি যদি ট্রেডিং শিখতে পারেন তাহলে অবশ্যই এর থেকে প্রচুর আয় করতে পারবেন।

বিটকয়েন একাউন্ট কেন খুলবেন

বিটকয়েন একাউন্ট সাধারণত বিটকয়েন স্টক করে জমা রাখার জন্য খুলতে পারেন এছাড়াও বিটকয়েন আদান প্রদান করার জন্য করা যায়। বিটকয়েন একাউন্ট ব্যবহার করে আপনি যেকোন ট্রানজেকশন সফল করতে পারেন। এ ছাড়া বিটকয়েন কেনা বেচা ও বিটকয়েন পাঠানো সহ সকল কাজে বিটকয়েন একাউন্টের প্রয়োজন হয় যার ফলে বিটকয়েন একাউন্ট খুলতে হয়। তাহলে আপনারা বুঝতে পারলেন বিটকয়েন একাউন্ট কেন খুলবেন।

বিটকয়েন একাউন্ট খোলার নিয়ম (Create Bitcoin Account)

আপনারা কি বিটকয়েন একাউন্ট খুলতে চান তাহলে এখন আমরা বিটকয়েন এখন কিভাবে খুলবেন তা জানতে নিম্নে উপায়গুলো আলোচনা করা হলোঃ
  • আপনাকে সর্বপ্রথম বাজারে যেতে হবে বাজার থেকে কয়েনবেস(Coinbase) লিখে সার্চ করে প্রথম ওয়েবসাইটিতে প্রবেশ করতে হবে।
  • ওয়ালেটটির ওয়েব সাইটে প্রবেশ করার পর আপনি স্টার্ট বাটনে ক্লিক করুন।
  • ওয়ালেটটির Get Started বাটনে ক্লিক করার পর একটি ফ্রম আসবে সেখানে আপনার প্রথম নাম এবং শেষ নাম দিতে হবে এবং জিমেইল দেওয়া শেষে একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড সেট করতে হবে। এরপর আপনি Create Account অপশনে ক্লিক করবেন।
  • আপনার অ্যাকাউন্ট প্রায় তৈরি হয়ে গেছে, এখন শুধু আপনাকে ভেরিফাই করার জন্য আপনার ইমেইলে একটি লিংক পাঠাবে উক্ত লিংকে ক্লিক করে একাউন্টটি ভেরিফাই করে একটিভ করতে হবে।
  • এরপর মোবাইল নাম্বার যোগ করার অপশন আসবে। সেখানে অবশ্যই আপনার ব্যবহার করা একটি বৈধ নাম্বার দিতে হবে যেটিতে সব সময় ভেরিফিকেশন কোড আপনি ব্যবহার করতে পারেন।
  • আপনার নাম্বার ভেরিফিকেশন করার জন্য Coinbase কোম্পানি আপনার মোবাইল নাম্বারে একটি কোড পাঠাবে, উক্ত কোডটি দেখে আপনাকে কয়েন বেজে জমা দিতে হবে তাহলে আপনার নাম্বার ভেরিফিকেশন কমপ্লিট হয়ে যাবে এবং নাম্বার একাউন্টে যোগ হয়ে যাবে যাতে আপনি পরবর্তীতে অ্যাকাউন্ট রিকভার করতে পারেন।
  • তাহলে আপনি একটি বিটকয়েন একাউন্ট খোলার জন্য কয়েনবেজ একাউন্ট খুলে ফেলেছেন। এখন আপনার একাউন্টে প্রোফাইল সেটআপ করার জন্য তথ্য দিতে হবে যা পরে দিলেও সমস্যা নাই।

বিটকয়েন একাউন্ট খোলার নিয়মঃ(দ্বিতীয় পদ্ধতি)

আপনি আরেকটি এক্সচেঞ্জার ব্যবহার করে বিটকয়েন ওয়ালেট বা ক্রিপ্ট কারেন্সি একাউন্ট খুলতে পারে চলুন সেই দ্বিতীয় ও উপায়টি জেনে নেই। এখন আমরা সবচেয়ে জনপ্রিয় ট্রাস্টেন্ড ওয়ালেট বাইনান্স বিটকয়েন একাউন্ট কিভাবে খুলবেন তা জেনে নেই।
  • সর্বপ্রথম আপনার ফোনে  Binance অ্যাপ্লিকেশনটি ডাউনলোড করে নিতে হবে।
  • ওয়ালেটটি ডাউনলোড করার জন্য গুগল প্লে স্টোর থেকে  Binance লিখে সার্চ করবেন এবং আপনার সামনে অ্যাপ্লিকেশনে চলে আসবে সেটি ইন্সটল করুন।
  • ইন্সটল হয়ে গেলে অ্যাপ্লিকেশনটি ওপেন করুন এবং যাবতীয় পারমিশন গুলো দিয়ে দিন।
  • এরপর আপনার সামনে রেজিস্ট্রেশন কখন আসবে সেটিতে ক্লিক করুন।
  • রেজিস্ট্রেশন অপশনে ক্লিক করার পর একটি রেজিস্ট্রেশন ফ্রম আসবে সেখানে আপনি আপনার প্রথম নাম এবং শেষ নাম দিয়ে তারপর মোবাইল নম্বর বা জিমেইল দিতে পারেন।
  • জিমেইল দেওয়ার পর আপনাকে একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড দিতে হবে অর্থাৎ সেট করতে হবে এরপর ভেরিফাই করার জন্য আপনার জিমেইল অথবা ফোন নাম্বারে একটি কোড পাঠাবে কোডটি বসিয়ে ভেরিফিকেশন কমপ্লিট করতে হবে।
  • ভেরিফিকেশন হয়ে গেলে এবার আপনার চেহারা বা মুখ ভেরিফিকেশন করতে হবে এর জন্য সামনের ক্যামেরা অন করে আপনার চেহারা আপনার ভোটার আইডি কার্ড অনুযায়ী থাকতে হবে এবং ভেরিফিকেশন করতে হবে।
  • আপনাকে অবশ্যই ভোটের আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়ে ভেরিফিকেশন করতে হবে তাহলে আপনি অ্যাকাউন্টটি ব্যবহার করতে পারবেন।
  • ভেরিফিকেশন করা হলে এবার আপনার কাছে কিছু তথ্য জানতে চাইবে তা দিলেও পারেন আবার পরে দিতেও পারেন।
  • আর অবশ্যই মনে রাখবেন আপনার কান্ট্রি বাংলাদেশ সিলেক্ট করবেন এবং কারেন্সি গুলো ডলারে সিলেক্ট করুন।
  • তাহলে আপনার তৈরি হয়ে গেল বাইনান্স একাউন্ট, যেটি ব্যবহার করে আপনি বিটকয়েন কিনতে পারবেন এবং বিক্রি করতে পারবেন তা ছাড়াও বিটকয়েন একাউন্টে জমা রাখতে পারবেন। তাহলেই আপনার বিটকয়েন একাউন্ট তৈরি করতে পারলেন।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক আশা করছি আপনারা বিটকয়েন একাউন্ট খোলার নিয়ম অর্থাৎ বিটকয়েন একাউন্ট কিভাবে খুলবেন তা জানতে পারলেন এবং বিটকয়েন একাউন্ট করার দুটি পদ্ধতি জানতে পারলেন। এছাড়া আপনি বাইনান্স একাউন্ট কিভাবে খুলবেন তার নিয়ম জানতে পারলেন। আশা করছি আপনারা বিটকয়েন একাউন্ট খুলতে পেরেছেন এবং আর্টিকেলটি ভাল লেগে থাকলে অবশ্যই শেয়ার করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url