হাঁস পালন পদ্ধতি - হাঁসের বাসস্থান সম্পর্কে জানুন

বর্তমানে আমরা সকলেই জানি ডিমের দাম প্রচুর পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। হাঁস মুরগি থেকে শুরু করে লেয়ার মুরগির ডিমের দাম পর্যন্ত বেড়ে গেছে। আর এই কারণে খামারীরা ডিম বিক্রি করে লাভবান হচ্ছে। আপনারা অনেকেই নতুন করে হাঁস পালন শুরু করেছেন। মূলত এর কারণ হচ্ছে মুরগির ডিমের থেকে হাসির ডিমের উপকারিতা বেশি এবং ডিমের বাজার মূল্য বেশি থাকায়। আবার আমাদের মধ্যে অনেকে আছে যারা নতুন করে হাঁস পালন শুরু করতে চান এবং হাঁস পালন পদ্ধতি সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জানতে চান। কিন্তু কিভাবে জানবেন বুঝতে পারছেন না। তাহলে এই সম্পূর্ণ পোস্টটি আপনার জন্য।
হাঁস পালন পদ্ধতি

এই সম্পূর্ণ পোস্টটি জুড়ে আমি হাঁস পালন পদ্ধতি এবং হাঁসের বাসস্থান সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করার চেষ্টা করব। তাই আপনি যদি সঠিক উপায়ে হাঁসের খামার তৈরি করে লাভবান হতে চান তাহলে সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

ভূমিকা।হাঁস পালন পদ্ধতি

বর্তমান প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে অনেক মানুষ বাণিজ্যিকভাবে শুরু করছেন হাঁসের খামার। মূলত এর কারণ হচ্ছে হাঁসের ডিমের দামের পাশাপাশি হাঁসের মাংসের দামও অনেক পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। যার কারণে মানুষ শুরু করছেন হাঁস পালন। অনেক মানুষ আছেন যারা ডিমের জন্য হাঁস পালন করেন আবার অনেক মানুষ আছে যারা হাঁসের মাংস বাজারজাতকরণের জন্য হাঁস পালন করে থাকেন। অধ্যায় অনেকেই আছেন যারা নতুন করে হাঁস পালন শুরু করতে চান। কিন্তু কিভাবে শুরু করবেন বুঝতে পারছেন না।

এই সম্পূর্ণ পোস্টটি জুড়ে আমি হাঁস পালন পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করার চেষ্টা করব। তাই আপনি যদি সঠিক হাঁসের খামার গড়ে তুলতে চান তাহলে সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়লে আশা করি আপনি সঠিক হাঁসের খামার ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পেয়ে যাবেন। চলুন দেরি না করে শুরু করা যাক।

হাঁসের জাত সমূহ

সাধারণত হাঁস ৩ প্রকার। যেমন,
  • মাংস উৎপাদন
  • ডিম উৎপাদন
  • এবং সর্বশেষ মাংস এবং ডিম উৎপাদন

হাঁসের বাচ্চা নির্বাচন

হাস অথবা মুরগি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে বাচ্চা নির্বাচন। অর্থাৎ আপনার বাচ্চা নির্বাচন যদি সঠিক না হয় তাহলে আপনি হাঁস পালনে লাভবান হতে পারবেন না। সে ক্ষেত্রে আমি উপরে হাঁসের তিনটি জাত তুলে ধরেছি। সে ক্ষেত্রে আপনি যদি শুধুমাত্র মাংস উৎপাদনের জন্য এবং এটি বাজারজাতকরণের জন্য পালন করে থাকেন তাহলে মাংস উৎপাদনের জাত। আর যদি ডিম উৎপাদনের জন্য পালন করে থাকেন তাহলে ডিম উৎপাদনের জাত।

সর্বশেষ আপনি যদি ডিম এবং মাংস উভয় উৎপাদনের জন্য পালন করতে চান তাহলে মাংস এবং ডিম উৎপাদনের জাত বেছে নিতে হবে। আপনি যেকোনো একটি জাত বেছে নিয়ে সেই যাদের সবচেয়ে ভালো বাচ্চা ক্রয় করুন। অর্থাৎ সুস্থ এবং সবল বাচ্চা ক্রয় করুন। আর সেই বাচ্চাগুলো কে ভালোভাবে যত্ন করুন এবং নিয়মমাফিক কাজ করুন। তাহলে আশা করি আপনি লাভবান হবেন। চলুন এবার বাচ্চা নেওয়ার পরের ব্যবস্থাপনা দেখা যাক।

বাচ্চার ব্রুডিংকালীন ব্যবস্থাপনা

শুধুমাত্র সঠিক বাচ্চা নির্বাচন করলে আপনার কাজ শেষ হয়ে যাবে। নির্বাচনের পরবর্তী ধাপ হচ্ছে ব্রুডিং। সহজ কথায় বলতে গেলে বাচ্চাকে তাপ প্রদান করা। শুরুতেই বাচ্চাকে দ্রুত বৃদ্ধির জন্য বাচ্চাকে সঠিক পরিমাণ তাপ দিতে হয়। আর এই তাপ দেওয়ার ব্যবস্থাপনাকে সাধারণত আমরা বলে থাকি ব্রুডিং। সাধারণত হাঁস বাচ্চা অবস্থায় নিজে তাপ দিতে পারে না যার কারণে বাচ্চাদের শরীরের সঠিক তাপমাত্রা ঠিক রাখার জন্য বাচ্চাদের আলোর মাধ্যমে তাপ দেওয়া হয়।

এটি তৈরি করার জন্য আপনাকে শুরুতে অল্প একটু জায়গায় গোল করে ঘিরে ফেলতে করতে হবে। এবং ওইটার ভিতরে বাচ্চাকে প্রবেশ করাতে হবে। তারপর পরবর্তীতে বাচ্চার প্রয়োজনীয় খাবার পানি এবং প্রয়োজনীয় খাবার সেখানে দিয়ে দিতে হবে। এর পরবর্তীতে ব্রুডিং করে সঠিক তার প্রদান করতে হবে। আর বাচ্চার বয়স প্রতি সপ্তাহ বৃদ্ধির পর পর ব্রুডিং এর তাপমাত্রা আনতে হবে। অর্থাৎ বাচ্চা যত বড় হবে তাপ তত কমিয়ে ফেলতে হবে। তাই উপরের পদ্ধতি গুলো অবশ্যই মেনে চলুন।

হাঁস পালন পদ্ধতি

বর্তমানে একটি লাভজনক ব্যবসা হচ্ছে হাঁসের খামার তৈরি। মূলত এর প্রধান কারণ হচ্ছে হাঁসের মাংস এবং হাঁসের ডিমের দাম বেশি। মূলত যার কারণে মানুষ বাণিজ্যিকভাবে হাঁস পালনে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। আপনি হাঁস অথবা মুরগি পালন করেন না কেন তার জন্য দরকার সঠিক ব্যবস্থাপনা। অর্থাৎ আপনার ব্যবস্থাপনা যদি সঠিক না হয় তাহলে আপনি লাভবান হতে পারবেন না। সে ক্ষেত্রে আজকের সম্পূর্ণ পোস্টটিতে আমি সম্পন্ন হাঁসের সঠিক ব্যবস্থাপনা আপনাকে সহজ আকারে বুঝিয়ে দিব। চলুন দেরি না করে শুরু করা যাক।

হাঁসের খামারের জন্য জায়গা নির্বাচন - হাঁসের বাসস্থান

প্রথমে আপনাকে একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে যে, আপনি যদি মুরগির মত হাঁসের বাসস্থান তৈরি করতে চান তাহলে কিন্তু হবে না। দ্বিতীয় হাঁসের খামারের জন্য এমন জায়গা নির্বাচন করতে হবে যেখানে সাধারণত পরিমান মত রোদ, উঁচু জায়গা এবং খোলামেলা পরিবেশ হয়। তাহলে উক্ত জায়গাটি হাঁস পালনের জন্য উপযুক্ত। আমাদের মধ্যে অনেকে আছেন যারা ভাবেন যে হাঁসের খামার তৈরি করবেন পানিতে অথবা পানির উপরে। এটি একমাত্র আপনাদের ভুল ধারণা।

তার কারণ হচ্ছে, আপনাকে এমন একটি জায়গা নির্বাচন করতে হবে যেখানে পানি জমে না থাকে অথবা বেলে মাটি না থাকে। এছাড়াও আপনি চাইলে একটু ঘাসযুক্ত এলাকা নির্বাচন করতে পারেন। সর্বশেষ একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে যে, আপনি যেখানে হাঁসের খামার তৈরি করবেন সেখানে কোন ঝোপ এবং ঝাড় ও জঙ্গল না থাকে। সর্বশেষে বলা যায় আমার ওপরে দেখা মত জায়গা নির্বাচন করুন। চলুন পরবর্তী বিষয়ে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

যেভাবে হাঁসের বাসস্থান বানাবেন

প্রথমত আপনি যদি অল্প হাঁস পালন করতে চান তাহলে স্বাভাবিকের তুলনায় ঘর হবে ছোট। আর আপনি ঠিক তখনই স্থায়ীভাবে ঘর তৈরি করবেন যখন আপনি বেশি হাঁস পালন করবেন। দ্বিতীয়তঃ সঠিক হাঁসের খামার ঘর চারকোণা, লম্বা এবং সরু হওয়া উচিত। সাধারণত হাঁসের খামারের চাল খুব ভালোভাবে তৈরি করতে হবে। তার কারণ হচ্ছে আবহাওয়া। আর আপনি যদি দেখেন আপনার খরচ বেশি হয়ে যাচ্ছে তাহলে হাঁসের খামারের দরজা বানাতে বাঁশ ব্যবহার করতে পারবেন।

তবে আপনি একটি বিষয় খেয়াল রাখবেন এমন ভাবে ঘর তৈরি করবেন যেন বিভিন্ন আবহাওয়া থেকে হাঁসগুলো সুরক্ষিত থাকতে পারে। এর পরবর্তীতে হাঁস পালনের জন্য খামারের বেঁধে পাকা করবেন। এর পরবর্তীতে উক্ত মেয়েদের উপরে কাঠের গুড়া অথবা আপনি চাইলে তুষ ব্যবহার করতে পারেন। সর্বশেষ আসে হাঁসের ডিমের জায়গা।

আজ যেন ডিম দিতে পারে সেই কারণে খামারের এক কোণে সুন্দর করে একটি জায়গা করে দিতে হবে এবং জায়গাটি সুন্দর করে চারিদিক দিয়ে ঘেরাও করে দিতে হবে। উপরের নিয়ম গুলো মেনে খামার তৈরি করলে আশা করি সঠিক খামার ব্যবস্থাপনা পেয়ে যাবেন। আরো তথ্য জানতে আমাদের সাথেই থাকুন।

হাঁস পিছু কতটা জায়গা দিতে হবে

হাঁসের খামারে সঠিক ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করতে হলে আপনাকে জানতে হবে যে প্রাপ্তবয়স্ক হাঁসের জন্য ঠিক কতটুকু জায়গা প্রয়োজন। সাধারণত একটি প্রাপ্তবয়স্ক হাঁসের ক্ষেত্রে জায়গা প্রয়োজন হবে দুই থেকে তিন বর্গফুট। সেই ক্ষেত্রে আপনি যদি ৫০০ হাঁস পালন করেন তাহলে সর্বমোট প্রায় এক হাজার থেকে ১৫০০ বর্গফুট জায়গার প্রয়োজন। আর হাঁসের ঘর এমন ভাবে তৈরি করতে হবে যাতে করে হাঁসের খামারে কোন পশু অথবা প্রাণী আক্রমণ করতে না পারে।

বিশেষ করে শেয়ালের থেকে সুরক্ষা ব্যবস্থা করতে হবে। সে ক্ষেত্রে আপনি যদি হাঁসের খামারে বিভিন্ন কাঠের গুঁড়ো ব্যবহার না করতে চান তাহলে অবশ্যই খড় অথবা শুকনো পাতা দিয়ে চার থেকে পাঁচ ইঞ্চি পুরু করে দিতে হবে। হাস ডিম পারলে সেটি ভেঙ্গে না যায়। চলুন আরো কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক।

গৃহস্থালির ফেলনা  দিয়ে হাঁস পালন

অনেক মানুষ আছেন যারা মাংসের জন্য হাঁস পালন করেন আবার অনেকে আছেন যারা শুধুমাত্র ডিমের জন্য হাঁস পালন করে থাকেন। সে ক্ষেত্রে আপনি যদি ফেলনা পদ্ধতিতে হাত-পালন করতে চান তাহলে আমি বলব হ্যাঁ সম্ভব। কিন্তু আপনাকে একটি কথা চিন্তা করতে হবে যে, আপনি হাঁসকে যত খাওয়াবেন আপনি তার থেকে তত বেশি ডিম পাবেন। অর্থাৎ বেশি ডিম পেতে হলে হাঁসকে পর্যাপ্ত পরিমাণে খাওয়াতে হবে। সে ক্ষেত্রে আপনি অল্প হাঁস পালনে আপনার ফেলে দেওয়া খাবারগুলো খাইয়ে হাঁস পালন করতে পারেন।

সে ক্ষেত্রে আপনি চাইলে আপনার বাড়িতে ব্যবহৃত বাড়তি খাবার, যেমন ভাত, চাল, চাল ধোঁয়া পানি, বিভিন্ন শাক সবজির খোসা, মাছের কাটা অথবা মাছের গায়ের আঁশ ইত্যাদি খাবার খাওয়াতে পারেন। অর্থাৎ আপনার ফেলে দেওয়া খাবারগুলো দিয়ে অনায়াসে হাঁস পালন করতে পারবেন। এছাড়াও ওই খাবারগুলোর পাশাপাশি হাঁসের ওজন ঠিক রাখতে এবং সঠিক ডিম ব্যবস্থাপনা পেতে বিভিন্ন ধরনের শামুক খাওয়াতে পারেন। তাই পরিশেষে বলা যায় যে, আপনি ঘরোয়া পদ্ধতিতে অল্প সংখ্যক হাঁস পালন করতে পারবেন।

পানি ছাড়া হাঁস পালন পদ্ধতি

আমরা সবাই মনে করে থাকি যে, পানি ছাড়া হাঁস পালন সম্ভব নয়। তবে এটি আপনাদের ভুল ধারণা। আসের পানির প্রয়োজন পড়ে না। হাঁসের পানির প্রয়োজন ঠিক তখনই পড়ে যখন তারা মেটিং করে। অর্থাৎ ডিম দেয়ার প্রসেস। আপনি চাইলে মুরগির মতো করে হাস পালন করতে পারেন। তবে হাঁসের সুবিধার ক্ষেত্রে আপনি ছোট জায়গায় ওদের জন্য পানির ব্যবস্থা করে দিতে পারেন। সে ক্ষেত্রে আপনি চাইলে একটি ডোবা তৈরি করতে পারেন অথবা একটি ট্যাংক তৈরি করতে পারেন।

সাধারণত হাঁসের জন্য যদি ট্যাংক তৈরি করতে চান তাহলে লম্বা এবং চওড়ায় ৬ থেকে ৭ ফুট এবং গভীরতা নয় থেকে 10 ইঞ্চি দিতে পারেন। যাতে করে প্রয়োজনমতো হাসেরা ওই জায়গা গুলোতে যেয়ে গোসল করতে পারে এবং মেটিং করতে পারে। তাই পরিশেষে বলা যায় যে পানি ছাড়া হাঁস পালন করা সম্ভব। কিন্তু হাঁসের গোসলের জন্য একটি ছোট্ট করে ট্যাংক তৈরি করে দিতে হবে।

ঘর ব্যবস্থাপনা

আর অথবা মুরগি পালন করেন না কেন ঘর ব্যবস্থাপনা খুবই জরুরি। অর্থাৎ ঘরের আদ্রতা ঠিক না রাখলে হাঁস পালন সম্ভব না। সাধারণত 12.8 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড থেকে 23.9 ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড পর্যন্ত হাঁসের ঘরের তাপমাত্রা হওয়া উচিত। এক কথায় ৫০ ডিগ্রি থেকে ৭৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট। হাঁস পালনে হাসির ঘরের আর্দ্রতা ঠিক রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তার কারণ সর্বোচ্চ 70% আদ্রতা সহ্য করতে পারে খামারের হাঁসগুলো।

৭০ পার্সেন্টের নিচে আদ্রতা কমে গেলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেখা যায় হাঁসের পাখনা গুলো পড়ে যেতে। আর এই পাখাগুলো পড়তে শুরু করলে হাঁসের ডিম দেয়ার পরিমাণ কমে যায়। তাই অবশ্যই আদ্রতা ঠিক রাখার চেষ্টা করবে। তার কারণে এমন জায়গায় বেছে নিবেন যাতে করে সঠিক বাতাস চলাচল ব্যবস্থা এবং শুকনো জায়গা থাকে। আপনি আদ্রতা ঠিক রাখার জন্য খামারের মেঝেতে পাতা বিছিয়ে দিতে পারেন অথবা কাঠের গুঁড়ো বিছিয়ে দিতে পারেন।

তাহলে আশা করি আদ্রতা ঠিক থাকবে। তাই পরিশেষে বলা যায় সঠিক পদ্ধতিতে হাঁস পালন আপনাকে করে দিতে পারে লাভবান এবং অনিয়মের কারণে প্রচুর ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন। তাই অবশ্যই সঠিক পদ্ধতি ব্যবহার করুন।

হাঁসের খাবার তালিকা

নিচে হাঁসের পছন্দের খাবার তালিকা তুলে ধরা হলো,,

    খাবারের নাম

                সময়

গমের গুঁড়ো

যদি পারেন প্রতিদিন

ভুট্টার গুঁড়ো

যদি পারেন প্রতিদিন

সয়াবিন মিল

অন্তত সপ্তাহে এক থেকে দুই দিন

সয়াবিন বীজ সিদ্ধ

অন্তত সপ্তাহে এক থেকে দুই দিন

  লবণ

অন্তত সপ্তাহে এক থেকে দুই দিন

বাদামের  খৈল

অন্তত সপ্তাহে এক থেকে দুই দিন

তিলের খৈল

অন্তত সপ্তাহে এক থেকে দুই দিন

ঝিনুক

অন্তত সপ্তাহে এক থেকে দুই দিন

শামুক

যদি পারেন প্রতিদিন

শুটকি মাছের গুঁড়ো

সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন

চালের কুড়া

সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন

ঝিনুক চূর্ণ

অন্তত সপ্তাহে এক থেকে দুই দিন

আমিও পরে হাঁসের বিভিন্ন পছন্দের খাবারের তালিকা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করি আপনি ওপরে দেখানো খাবার গুলো  খাওয়াতে পারেন।

হাঁসের খাবারের শতকরা উপাদান

হাঁসের বয়সের নির্ভর করে হাঁসের শতকরা খাবারের উপাদান নির্ধারণ করা হয়। সে ক্ষেত্রে প্রথম সপ্তাহ থেকে তৃতীয় সপ্তাহ বয়সের হাঁসের খাবারের শতকরা নিচে দেওয়া হল,,
  • আমি জাতীয় খাবার - ১৯.৫%।
  • স্নেহ পদার্থ জাতীয় - ১.৭%।
  • ফসফরাস - ০.৮৬ পার্সেন্ট।
এর পরবর্তীতে তিন সপ্তাহ থেকে বেশি বয়সের হাঁসের খামারে আমিষের শতকরা ১৭ ভাগ প্রদান করতে হবে।

বিশেষ সতর্কতা

আপনি ভুলেও তিল অথবা বাদাম ছাড়া অন্য কোন খোসা জাতীয় খাবার হাঁসকে খাওয়াবেন না। আপনি উক্ত জাতীয় খাবার খাওয়ানোর বদলে প্রতিনিয়ত হাঁসকে শামুক খাওয়াতে পারেন। এতে করে হাঁসের ওজন বেশি হবে এবং হাঁস বেশি পরিমাণে ডিম পারবে। তাই অবশ্যই নিয়মগুলো মেনে চলুন।

হাঁসের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা

হাঁস পালনে লাভবান হতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অর্থাৎ আপনি এমনভাবে খামার তৈরি করবেন যাতে করে আপনার খামারের হাঁস গুলো রোগ মুক্ত থাকে। এক কথায় আপনি যদি আপনার খামারকে রোগ মুক্ত রাখতে পারেন তাহলে হাঁসের কোন রোগ হবে না আর আপনার চিকিৎসা খরচ প্রদান করতে হবে না। এতে করে আপনার খরচ অনেকটাই কমে যাবে আর আপনার লাভের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। অর্থাৎ আপনাকে অবশ্যই অনেক পরিশ্রম করতে হবে।

সব সময় খামারের পরিচর্যা করতে হবে এবং হাঁসের বিভিন্ন রোগের ক্ষেত্রে সচেতন থাকতে হবে। খামারকে সবসময় পরিষ্কার এবং পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে যাতে করে হাঁসের রোগ বালাই কম হয়। এছাড়াও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে হাঁসের দুটি রোগের টিকা প্রদান করতে হবে। রোগের নাম হচ্ছে, ডাক প্লেগ এবং ডাক কলেরা। আপনি আপনার নিকটস্থ কোনো বিশেষজ্ঞ পশু চিকিৎসকের পরামর্শে ব্যবহার করতে পারেন।

হাঁসের প্রতিরোধক টিকাদান কর্মসূচি

হাঁস এবং মুরগিকে রোগমুক্ত রাখতে টিকা প্রদানের বিকল্প নেই। তবে আপনাকে একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে যে, আপনি যখন হাসকে টিকা প্রদান করবেন তখন অবশ্যই সুস্থ থাকতে টিকা প্রদান করবেন। তার কারণ কোন রোগে আক্রান্ত থাকা হাস কে টিকা প্রদান করলে কোন ফলাফল পাওয়া যায় না। তাই অবশ্যই সুস্থ দেখে তারপর টিকা প্রদান করবেন।

আপনি যে প্রতিষেধক ব্যবহার করবেন ভুলেও এটি সূর্যের আলোতে আনা যাবে না। সঠিক টিকা দিতে হবে ২১ দিন বয়সে এবং পরবর্তী টিকা ৩৬ দিন এবং সর্বশেষ কলেরা টিকা দিতে হবে ৭০ দিন বয়সে। তবে টিকা প্রদানের আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ পশু ডাক্তারের পরামর্শে গ্রহণ করে টিকা প্রদান করবেন।

হাঁস পালন পদ্ধতি সম্পর্কে সচরাচর জিজ্ঞাসা ও প্রশ্ন উত্তর FAQ

প্রশ্নঃ হাঁস পালনের পদ্ধতি গুলোর নাম কি কি?
উত্তরঃ 
  • হাঁসের জাত নির্বাচন
  • ঘর ব্যবস্থাপনা
  • সঠিক জায়গা নির্বাচন
  • সঠিক খাদ্য ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি
প্রশ্নঃ হাসির দৌড়াতে কতটুকু জায়গা লাগে?
উত্তরঃ ১৬ বর্গফুট প্রতিটি হাঁসের জন্য বাহিরে এবং গ্রাউন্ড স্পেস এ ৪ থেকে ৬ বর্গফুট।

প্রশ্নঃ হাঁসের আবাসন কোনটি ভালো?
উত্তরঃ একটি বাগান অথবা একটি পুরানো খেলার ঘর।

প্রশ্নঃ বাড়ির উঠানে কি হাস রাখা যায়?
উত্তরঃ অবশ্যই রাখা যায় তার কারণ হচ্ছে হাঁস একটি হাসিখুশি প্রাণী বাড়ির উঠানে রাখার জন্য।

প্রশ্নঃ হাঁস কি ভাল পোষা প্রাণী?
উত্তরঃ হ্যাঁ অবশ্যই।

প্রশ্নঃ হাঁসের প্রধান খাদ্য কি?
উত্তরঃ শামুক।

প্রশ্নঃ হাঁস রেসিং টিমের মালিক কে?
উত্তরঃ জিন ফ্রান্সিস হাস।

প্রশ্নঃ হাস কি জার্মান কোম্পানি?
উত্তরঃ না আমেরিকান।

শেষ কথা।হাঁস পালন পদ্ধতি

এই সম্পূর্ণ পোস্টটি জুড়ে আমি হাঁস পালন পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। এই সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার পর যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করুন এবং নিত্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন তথ্য পেতে ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন। সর্বশেষ সম্পূর্ণ পোষ্টটি পড়ার পর আপনার মতামত কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url