জরুরি প্রয়োজনে ঘরে রাখার ৭টি গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ
স্বাস্থ্য সমস্যায় দ্রুত প্রতিকার পেতে ঘরে কয়েকটি প্রয়োজনীয় ওষুধ রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।নিচে প্রয়োজনীয় ঘরে রাখার কিছু ওষুধের নাম আলোচনা করা হলো, যা তাৎক্ষণিক সমস্যা যেমন জ্বর, পেট ব্যথা, অ্যালার্জি বা গ্যাস্ট্রিক সমস্যার প্রাথমিক চিকিৎসার সহায়ক হতে পারে।
তাহলে আপনারা আর কোন অসুবিধায় পড়বেন না।ঘরে যদি বিভিন্ন রকমের ঔষধ গুলো থাকে থাহলে খুবই ভালো।
পোস্ট সূচিপত্রঃ
১. প্যারাসিটামল (Paracetamol)
প্যারাসিটামল সাধারণ ব্যথানাশক যা জ্বর, মাথাব্যথা, এবং শরীর ব্যথার জন্য ব্যবহৃত হয়। বাংলাদেশে এটি
প্রায় সকল ফার্মেসিতেই পাওয়া যায় যেমন- Napa, Reneta, Ace, Paradin ।
প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ৫০০ মিগ্রা প্যারাসিটামল প্রতিবার ১-২টি ট্যাবলেট দিনে চার থেকে ছয় ঘণ্টা পর পর
সেবন করা যায়। সর্বোচ্চ ৮টি ট্যাবলেটের বেশি সেবন করবেন না।
● গর্ভবতী ও স্তন্যদায়ী নারীরা এটি নিরাপদে সেবন করতে পারেন।
● শিশুর জন্য এটি সিরাপ আকারে পাওয়া যায়, যেমন Napa Syrup।
২. আইবুপ্রোফেন (Ibuprofen)
আইবুপ্রোফেন পেশী ব্যথা, দাঁতের ব্যথা, আর্থ্রাইটিস বা মাথাব্যথার জন্য কার্যকরী। এটি সাধারণত প্রদাহ
ও ব্যথা কমাতে ব্যবহার করা হয়।
পরামর্শকৃত ব্র্যান্ড: Nurofen, Ibuset, Buprofen
ডোজ
প্রতি চার থেকে ছয় ঘণ্টা পর ২০০ মিগ্রা আইবুপ্রোফেন ট্যাবলেট খাবারের পর নিতে পারেন।
বিশেষ তথ্য
● খালি পেটে না খাওয়াই ভালো।
● উচ্চ রক্তচাপ বা স্টমাক আলসার থাকলে এটি এড়িয়ে চলুন।
৩. অ্যান্টিহিস্টামিন (Antihistamine)
কখন ব্যবহার করবেন?
অ্যান্টিহিস্টামিন অ্যালার্জি, হাঁচি, ইনসেক্ট বাইট, এবং চুলকানি নিরসনে উপকারী। ড্রাউজি ও নন-ড্রাউজি
অ্যান্টিহিস্টামিন দুটি প্রকারে আসে।
পরামর্শকৃত ব্র্যান্ড: Cetrim, Fexo, Alatrol, Histacin
ডোজ
● নন-ড্রাউজি অ্যান্টিহিস্টামিন দিনে একবার।
● ড্রাউজি অ্যান্টিহিস্টামিন ৪-৬ ঘণ্টা পর একবার।
বিশেষ তথ্য
● ড্রাউজি অ্যান্টিহিস্টামিন গ্রহণের পর ভারী মেশিনারি চালানো বা গাড়ি চালানো এড়ানো উচিত।
৪. গ্যাস্ট্রিক বা ইনডাইজেশন ওষুধ
গ্যাস্ট্রিকের জন্য বুক জ্বালা বা অ্যাসিডিটি দেখা দিলে এই ওষুধগুলি তাৎক্ষণিক উপশম দেয়। বাংলাদেশে
গ্যাভিসকন বা রেনিটিডিন সাধারণত ব্যবহৃত হয়।
পরামর্শকৃত ব্র্যান্ড: Gastric, Neotack, Gaviscon, Peptisol
ডোজ
প্রয়োজন অনুযায়ী খাবারের পর সেবন করতে পারেন, তবে প্যাকেটে দেয়া নির্দেশনা মেনে চলুন।
বিশেষ তথ্য
● গর্ভাবস্থায় বুক জ্বালা বা গ্যাস্ট্রিক সমস্যা বেশি হলে ফার্মাসিস্টের পরামর্শ নিয়ে সঠিক ডোজ
ব্যবহার করুন।
৫. ডায়রিয়া প্রতিরোধক ওষুধ
ডায়রিয়া হলে তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে লোপারামাইড বা ডায়োরালাইট কার্যকর। পেট ব্যথা বা ক্র্যাম্পিং থাকলে
এগুলো দ্রুত কাজ করে।
পরামর্শকৃত ব্র্যান্ড: Imotil, Diarstop, Oral Saline (ORS)
ডোজ
প্যাকেটে দেয়া নির্দেশনা মেনে খাবেন।
বিশেষ তথ্য
● যদি রক্ত বা কালো রঙের মল আসে, তবে এই ধরনের ওষুধ গ্রহণ করবেন না।
● পেটের ভাইরাস সংক্রমণে ডায়রিয়া হলে ORS সেবন করুন।
৬. হাইড্রোকর্টিসোন ক্রিম (Hydrocortisone Cream)
ত্বকের চুলকানি, র্যাশ বা এলার্জির জন্য হাইড্রোকর্টিসোন ক্রিম কার্যকর। এটি ত্বকের প্রদাহ কমাতে
সহায়ক।
পরামর্শকৃত ব্র্যান্ড: Cortisone, Proctosedyl, Dexa-Cort
কীভাবে ব্যবহার করবেন?
প্রতিদিন ১-২ বার প্রভাবিত স্থানে অল্প পরিমাণে প্রয়োগ করুন।
বিশেষ তথ্য
● ১০ বছরের নিচের শিশুদের জন্য ব্যবহার করবেন না।
● মুখে ব্যবহার করার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
৭. ময়েশ্চারাইজার (Moisturiser)
শুষ্ক ত্বক, একজিমা বা অ্যালার্জি জনিত ত্বকের সমস্যা কমাতে ময়েশ্চারাইজার প্রয়োজনীয়। এটি ত্বকের
আর্দ্রতা ধরে রাখতে সহায়ক।
পরামর্শকৃত ব্র্যান্ড: Vaseline, Lactocalamine, Emolent Cream
কীভাবে ব্যবহার করবেন?
একদিনে ৩-৪ বার প্রয়োগ করুন।
বিশেষ তথ্য
● স্টেরয়েড ক্রিম ব্যবহার করলে আগে ময়েশ্চারাইজার প্রয়োগের পর ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন।
অতিরিক্ত যা রাখা উচিত
● থার্মোমিটার: তাপমাত্রা মাপার জন্য।
● অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম (স্যাভলন): ছোটখাটো ক্ষতে ব্যবহার করতে।
● আইস প্যাক: ব্যথা বা মচকে গেলে আরাম দেয়।
সতর্কতামূলক তথ্য
১. ওষুধের নির্দেশনা মেনে চলুন এবং নির্ধারিত ডোজের বেশি সেবন করবেন না।
২. ওষুধ বাচ্চাদের নাগালের বাইরে এবং ঠান্ডা স্থানে সংরক্ষণ করুন।
৩. মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ ফেলে না দিয়ে ফার্মেসিতে ফেরত দিন।
শেষ কথা
এই ওষুধগুলো ঘরে রাখলে ছোটখাটো সমস্যা তৎক্ষণাৎ মোকাবিলা করা যাবে এবং আপনার পরিবারের
সুরক্ষায় তাৎক্ষণিক ভূমিকা রাখতে সহায়ক হবে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url